আঞ্চলিক ভূগোল ( B.A )

আমরা অঞ্চল সম্পর্কে আলোচনা করব কেন ?

অঞ্চল সম্পর্কে আলোচনা : অঞ্চলের কোন সর্বসম্মত বিশেষ সংজ্ঞা সুনির্দিষ্ট করা যায় না। বিশেষত যখন একটি কোন বিশেষণের দ্বারা বিশেষায়িত হয় না, সেই সময়ে অঞ্চলের সংজ্ঞা প্রদান অত্যন্ত কঠিন ও জটিল। সাধারণভাবে পৃথিবীপৃষ্ঠের কোন বিশেষ স্থানকে অঞ্চল রূপে চিহ্নিত করা হয়। যখন তার কতগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য অপর স্থান থেকে ঐ স্থানকে পৃথক করতে সাহায্য করে।

অঞ্চলের সমার্থক রূপে আরও কতগুলি শব্দ দেখতে পাওয়া যায়, যথা-Province বা প্রদেশ, division বা বিভাগ, zone, locality বা স্থানীয় এলাকা, District বা জেলা প্রভৃতি। এই সমস্ত নামই ভূগোলবিদদের দ্বারা অঞ্চলের সমর্থক নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প্রায়শই এইসব নামগুলি অঞ্চলের hierarchy-তে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য বিজ্ঞানের মত ভূগোলেও কিছু কিছু ধারণা সম্বলিত হয়ে নতুন ধারণা তৈরী করে। সময়ের সাথে সাথে এই ধারণাগুলি ক্রমবিবর্তিত হয়।

এই সাধারণ ধারণাকে বলা হয় Conceptualization। আঞ্চলিকীকরণ সাধারণত বিভিন্ন অঞ্চলের পারস্পরিক সম্পর্ক (arear linkage)- এর উপর ভিত্তি করা হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলের পারস্পরিক সম্পর্কে আঞ্চলিক ঐক্যকে নির্দেশ করে। প্রতিটি অঞ্চলের একটি সুনির্দিষ্ট কেন্দ্র থাকে যাকে বলা হয় Nodal বা local point যার চারপাশে অঞ্চলের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ প্রসারিত হয়।

আমরা অঞ্চল সম্পর্কে আলোচনা করব কেন

যে কোন ধরণের conceptualization-এর জন্য প্রয়োজন বর্ণনা (description) ব্যাখ্যা (explanation) এবং বিশ্লেষণ (analysis)। একটি নির্দিষ্ট বিভাগের ধারণা করতে গেলে তার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের যথাসম্ভব বর্ণনা প্রয়োজন। সমধর্মিতার উপর ভিত্তি করে এরপর বিভিন্ন এলাকাকে কতগুলি উপ-এলাকায় ভাগ করা হয়। এজন্য প্রয়োজন হয় ব্যাখ্যার বর্ণনা এবং ব্যাখ্যা পর্বের পর আসে বিশ্লেষণ পর্ব।

এই পর্বে বিশেষ ধারণা সমগ্রভাবে বিশ্লেষিত হয় এবং এই বিশ্লেষণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে বর্ণনা ও ব্যাখ্যা এবং যা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমূলক আলোচনা।

(১) Model হিসেবে Region-এর ব্যবহার

আঞ্চলিকীকরণের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় বিগত ১০০ বছরে অঞ্চলের সীমানা নির্দেশে বহু পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিকীকরণের কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় লক্ষ্য করা যায়।

  • প্রথমত, বিভিন্ন অঞ্চলের প্রত্যেকটি গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে আঞ্চলিকীকরণ করা হয়। সেক্ষেত্রে অঞ্চল গঠনের কারণ গুরুত্বপূর্ণ নয়।
  • দ্বিতীয়ত, একই অঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলগুলির মধ্যে পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে আঞ্চলিকীকরণ করা হয়।
  • তৃতীয়ত, বর্ণনাত্মক পরিসংখ্যানের ওপর এবং বিশ্লেষণাত্মক পরিসংখ্যান পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক প্রণালীগুলিকে পৃথক করা।

এক্ষেত্রে Factor analysis বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিকীকরণ শেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণের হাতিয়ার। কিন্তু আঞ্চলিকীকরণ কখনই সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হতে পারে না। অঞ্চলের একটি নির্দিষ্ট সিস্টেম কেবলমাত্র ভৌগোলিক অনুসন্ধানের প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। এর ফলে অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্যের মাত্রা এবং কারণ জানা যায়।

আমরা এক্ষেত্রে যদি কোন কৃষি অঞ্চলের পরিবর্তন নির্ধারণের চেষ্টা করি সেক্ষেত্রে মূল বাজার কেন্দ্র থেকে দূরত্ব এবং Firm-এর আয়তন এর উপর ভিত্তি করে Firm-গুলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত। করতে পারি।

Von Thunen এর আধুনিক তত্ত্ব কৃষিগত ভূগোলের ব্যবহার উপযোগী সাধারণ ধারণা দিতে পারে। কিন্তু এই তত্ত্ব থেকে শস্য সমন্বয় অঞ্চল সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। যেসব কৃষি অঞ্চলের কথা বলা হয় সেগুলি থেকে বেশিরভাগ সময় আঞ্চলিক মডেলের ধারণা পাওয়া যায়।

(২) নিয়ন্ত্রিত সাডল হিসেবে অঞ্চল (Region)-এর ভূমিকা

আঞ্চলিক প্রণালী-এর দুটি উদ্দেশ্য থাকে- (a) বর্ণনাত্মক, (b) ব্যাখ্যামূলক।

বর্ণাত্মক

বর্ণাত্মক দিকে কৃষিগত ভূগোলের প্রকৃতি কোন সুনির্দিষ্ট অঞ্চলের ভিত্তিতে জানার জন্য সমস্ত কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলিকে সহধর্মীতার ওপর ভিত্তি করে বিভক্ত করা যায়। এরপর ঐ কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলিকে কতগুলি কৃষি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এভাবে কতগুলি শ্রেণিবিভাগের মাধ্যমে সমগ্র অঞ্চল সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া যায়। অন্যদিকে কৃষির অঞ্চলগত বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য ও তার কারণ সম্পর্কে জানা যায়।

আঞ্চলিক প্রণালী

এর দ্বিতীয় কাজ বিশেষভাবে ব্যাখ্যামূলক বাস্তবে সমগ্র বিশ্বে বিভিন্ন ধরণের আঞ্চলিক প্রণালী দেখতে পাওয়া যায়। আসলে এগুলি সবই তত্ত্বগত। এগুলির প্রত্যেকটির মধ্যে নানা ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। যদি আমরা সমগ্র বিশ্বের জলবায়ুগত পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে যাই সেক্ষেত্রে দেখা যায় বেশিরভাগ পরিবর্তন আবহাওয়ামন্ডলের সাধারণ ঘূর্ণাবর্তের ফলে ঘটে থাকে, কিন্তু এই প্রক্রিয়াগুলি প্রায়শই ভূমিভাগের বৈশিষ্ট্যগত অনিয়মের ফলে ব্যহত হয়।

ভূমিভাগের এই ধরনের অনিয়মিতভাবে বণ্টিত ভূমিরূপগুলি হল পর্বতমালা, বিভিন্ন মহাদেশের আকৃতি প্রভৃতি। এক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে বলা যায় কতগুলি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এবং ভূমিভাগের বিভিন্ন পার্থক্যের দরুণ সৃষ্ট আঞ্চলিক প্রণালীর মডেলগুলি বিশেষভাবে কার্যকর। স্বাভাবিক উদ্ভিদের ওপর জলবায়ুর প্রভাব বর্ণনা করতে গিয়ে এই ধরণের আঞ্চলিক মডেলের সাহায্য নেওয়া হয়।

(৩) মাডল হিসোব বিশ্লেষণাত্মক অঞ্চল –

কোন আঞ্চলিক প্রণালী তৈরীর ক্ষেত্রে দু’টি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

(ক) Analytical, (খ) Synthetic Regionalization

Analytical

পদ্ধতিতে কোন অঞ্চলকে কতগুলি বিভাগের দ্বারা বিভক্ত করা হয়। এজন্য পরবর্তীকালে বিশেষ কতগুলি পদ্ধতির প্রয়োজন। প্রথমে কোন অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। মৃত্তিকার প্রকৃতি অনেকাংশে আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে এবং প্রাকৃতিক অঞ্চল প্রাথমিকভাবে জলবায়ুগত পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল। Analytic regionalisation যে মডেল তৈরীর একটি প্রক্রিয়া হিসেবে ধরা হয়।

Synthetic Regionalisation

প্রাথমিকভাবে মডেল তৈরীর পর্যায়ে পড়ে না। এক্ষেত্রে বাস্তবের সরলীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে Regional System হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এগুলি মডেল হিসেবে কাজ করে।

(৪) পরিকল্পিত গঠনগত বৈশিষ্ট্য (আঞ্চলিকীকরণের ব্যবস্থার)

জলসেচ দপ্তরের কোন ইঞ্জিনিয়ার যদি প্রযুক্তির সম্পর্কে কাজ করেন সেক্ষেত্রে জলাধার অঞ্চলগুলি পৃথক পৃথকভাবে শ্রেণিবিভাগ করা প্রয়োজন। কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের সুনির্দিষ্ট সাংগঠনিক প্রকৃতি প্রভাবে নির্দেশিত হতে পারে। জলসেচের সুবিধার্থে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়নের পূর্বে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গঠনগত প্রকৃতি। অবস্থান প্রভৃতি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

এরপরে ব্যারেজ বা বাঁধ তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে। জল সেচের সুবিধার্থে বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলের প্রয়োজন অনুসারে আঞ্চলিকীকরণের প্রয়োজন। সরকারী যে কোন সিদ্ধান্তে আঞ্চলিকীকরণের মডেলের ওপর ভিত্তি করে গৃহীত হয়।

(৫) বাস্তাবর বিমূর্তরূপে অঞ্চলের ভূমিকা

প্রাথমিকভাবে যে কোন মডেলের বাস্তব বিমূর্ত চিত্ত স্বরূপ। বাস্তব এত জটিল যে এর সমস্ত বৈশিষ্ট্য একত্রীকরণ প্রায় অসম্ভব। এছাড়া এর কার্যগত সম্পর্ক বা এর পরস্পর নির্ভরশীলতা সম্পর্কে ধারণাও একরকম অসম্ভব। বাস্তবকে উপস্থাপিত করার জন্য শব্দ, চিহ্ন বা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে সরলীকরণ করা হয়।

কোন মানচিত্র ভূ-পৃষ্ঠের ওপর থাকা বিভিন্ন পার্থক্যকে যথাযথভাবে উপস্থাপিত করতে পারে না। মানচিত্রের সাফল্য নির্ভর করে মানচিত্রের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্যের নির্বাচনের ওপর। সমস্ত (Regionalised) গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেনা। বিশ্বের জলবায়ুসহ কৃষিগত অঞ্চলগুলি মডেলগুলির মাধ্যমে অথবা অনুমানের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হয়।

প্রতিটি মডেলই সূক্ষ্মতা (accuracy) এবং ব্যবহারযোগ্যতার উপর নির্ভর করে বিচার করা হয়। এভাবে বাস্তবের বিমূর্ততা আঞ্চলিক মডেলগুলির মধ্যে পরিলক্ষিত হয়।

(৬) Isomorphic system হিসেবে ভাঞ্চলের তাৎপর্য

যখন আমরা কোন সিস্টেম সম্পর্কে ব্যাখ্যা করি তখন আমরা এগুলিকে কোন system বুঝতে পারি।
সেক্ষেত্রে Isomorphic এবং Understood system-এর ওপর নির্ভর করে এই system-এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন লেখক তৈরীর উপাদান হিসেবে অঞ্চলগুলি ব্যাখ্যা করেন। সে সময় অনুসন্ধান করা হয় অঞ্চলগুলি কোন রকম সজীব উপাদান।

এই বিশ্লেষণ বিশেষভাবে করা হয়নি। কিন্তু একথা বলা হয় যে, অঞ্চলগুলি বিকাশ লাভ করে এবং বিকৃত হয়। ফলতঃ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি স্থান অধিকারের জন্য পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করে। এরফলে একটি অঞ্চলের মধ্যে অপর অঞ্চল সংযুক্ত হয় এবং রাষ্ট্রগুলি বর্ধিত হয়। এইভাবে একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অঞ্চলগুলি তৈরী হয়। পরবর্তীকালে এই system-গুলি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চল তৈরী করে।

(৭) পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে অঞ্চল (Region for Planning Purpose)

পরিকল্পনা বলতে বোঝায় সুনিয়ন্ত্রিত সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোন সমাজ তার বিকাশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিশেষভাবে জাতীয় অর্থনৈতিক সুগঠিত করার প্রয়োজন। আঞ্চলিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অনেকগুলি পর্যায় রয়েছে, এগুলি হ’ল- (ক) আঞ্চলিক আঞ্চলিকতাবাদ। (খ) অঞ্চলের সুনির্দিষ্টকরণ। (গ) সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রয়োজন নির্ধারণ। (ঘ) সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ। (ঙ) রাষ্ট্র এবং সার্বভৌম অঞ্চলগুলিকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কর্মসূচী গ্রহণ। (চ) পরিকল্পনার সাফল্য।

কোন অঞ্চলের বা রাষ্ট্রের বিকাশের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা নীতি গৃহীত হয়। এজন্য রাষ্ট্রীয় এবং জাতীয় পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানগুলি পাশাপাশি কাজ করে। আঞ্চলিকীকরণ প্রায়শই পরিকল্পনা পদ্ধতি, পরিকল্পনার মূল কাঠামো এবং পরবর্তী উন্নয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্যকে প্রভাবিত করে কারণ আঞ্চলিক পরিকল্পনা কোন অঞ্চলের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিকাশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত।

শ্রেণিবিভাগের প্রয়োজনীয়তা (The need for Classification)

  • (১) কোন বিষয়ের নামকরণ : ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণ বিভিন্নভাবে করা হয়। প্রশাসনিক সুবিধার্থে কোন একটি জায়গাকে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা হয়। এই ধরণের আঞ্চলিকশ্রেণিবিভাগ একটি সক্রিয় সরকার সংগঠনের পূর্বশর্ত। এই ধরণের সরকার ছাড়া শুল্ক আদায়, বিভিন্ন কাজের সুসংহত ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিঘ্নিত হয়।
  • (২) তথ্যের বিকেন্দ্রীকরণ : তথ্য বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রটিকে ‘Industrial shorthand’ বলা যেতে পারে। উদাহরণ- কোন মানুষ সমগ্র পৃথিবীর সব অঞ্চলের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য জানতেও পারে না, কিন্তু সাদৃশ্যপূর্ণ জলবায়ু অঞ্চলগুলিকে একত্রিত করে দিলে জলবায়ু অঞ্চলগুলি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ সহজতর হয়।
  • ( ৩) সাধারণীকরণে আরোহণাত্মক পদ্ধতি : শ্রেণিবিভাগের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের Inductive generalisation করা। অঞ্চলগত শ্রেণিবিভাগ বা আঞ্চলিকীকরণ একই ধরণের উদ্দেশ্য সাধন করে। উদারহণ স্বরূপ- কোন একটি দেশে মৃত্তিকার শ্রেণির ওপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক শ্রেণিবিভাগ করা হলে যে, শ্রেণিবিভাগের ভূমির ব্যবহারগত দিকের ওপর ভিত্তি করে প্রাপ্ত শ্রেণির সঙ্গে তুলনা করা যায়। সেক্ষেত্রে এই দুটি শ্রেণিবিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের সাধারণ ধারণা পাওয়া যায়।

শ্রেণিবিভাগ ও আঞ্চলিকীকরণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য

  • (ক) পৃথিবীপৃষ্ঠে সমস্ত অংশই কোন না কোন দিক থেকে স্বতন্ত্র। শ্রেণিবিভাজন এবং আঞ্চলিকীকরণের প্রক্রিয়া এই চিরন্তন সত্যকে উপস্থাপিত করে।
  • (খ) পৃথিবীপৃষ্ঠের বিশেষ বিশেষ অংশ বিশেষ বিশেষ অবস্থানে থাকায় প্রতিটি অবস্থান পরস্পর থেকে স্বতন্ত্র। যে কারণে অবস্থানগত ধর্মকে তারতম্যমূলক বৈশিষ্ট্য রূপে ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান শ্রেণিবিভাগকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। সেই কারণে ভৌগোলিক শ্রেণিবিভাগকে কম গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়। এই ধরনের সমস্যা ও অভিযোগগুলি Hartsharne এর দ্বারা গৃহীত হয়। তাদের মতে আঞ্চলিক শ্রেণিবিভাজনের ক্ষেত্রে মানচিত্র অত্যন্ত প্রয়োজন এবং শ্রেণিবিভাজন প্রণালীতে অবস্থান চিহ্নিতকরণ উপযুক্ত পদ্ধতিরূপে পরিগণিত হতে পারে।

====>>> ভারতে আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের কারণ

RANI250

My name is Rani Biswas, a web designer with six years of experience and the owner of dishacoachingcentre.com, a dedicated educational platform offering high-quality learning resources.

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button