ভারতীয় সংবিধানের ( Constitution ) বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ : ভারতীয় সংবিধান পৃথিবীর বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উপাদানের সমবায়ে এই সংবিধান গড়ে উঠেছে। এজন্য ভারতীয় সংবিধানে বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ –

বিশালতা
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন, ব্রিটিশ সরকারের পাস করা বিভিন্ন আইন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রভৃতি দেশের সংবিধানের কিছু কিছু অংশ এই সংবিধানে গৃহীত হয়েছে। মূল সংবিধানে ৩৯৫টি ধারা এবং ৮টি তফশিল ছিল। পরে সংযোজন হয়ে দাঁড়ায় ৪৪২টি ধারা ও ১২টি তফশিল। এই কারণে ভারতীয় সংবিধান বিশাল আকার ধারণ করেছে।
সুপরিবর্তনীয়তা ও দুষ্পরিবর্তনীয়তা
এই সংবিধান আংশিক সুপরিবর্তনীয় অর্থাৎ সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায়। আবার কিছু অংশ দুষ্পরিবর্তনীয় অর্থাৎ জটিল পদ্ধতির দ্বারা সংবিধান সংশোধন করা হয়।
মৌলিক অধিকার
এই সংবিধান ভারতীয় নাগরিকদের কয়েকটি মৌলিক অধিকার দান করেছে। প্রথমে এর সংখ্যা ছিল ৭টি, পরে একটি অধিকার বাতিল করা হয়। এখন মৌলিক অধিকারের সংখ্যা হল ৬টি।
নির্দেশমূলক নীতি
আয়ারল্যান্ডের সংবিধানের অনুকরণে ভারতের সংবিধানে নির্দেশমূলক নীতি যুক্ত করা হয়েছে। এগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এগুলি আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়।
সংসদীয় গণতন্ত্র
এই সংবিধান ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছে। এখানে রাষ্ট্রপতি নামমাত্র প্রধান। প্রধানমন্ত্রী হলেন প্রকৃত শাসক। নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত পার্লামেন্ট বা সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) হল প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী।
আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয়
এই সংবিধান ভারতে আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই ভারতে দুই ধরনের সরকার, সুপ্রিমকোর্ট, লিখিত সংবিধানের উপস্থিতি সত্ত্বেও বিচারব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ, এক নাগরিকত্ব ইত্যাদি আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ভারতীয় সংবিধানকে এক বিশেষ মাত্রা প্রদান করেছে এবং ভারতকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে পরিণত করেছে।



Very nice post