ব্যবসায়িক টিপস

জন্মাষ্টমীর ছুটি নিয়ে বিতর্ক। বিক্ষোভে শিক্ষকরা।

আগামী ১৫ই আগষ্ট দেশের স্বাধীনতা দিবস। দেশ জুড়ে গর্বের সাথে পালিত হবে স্বাধীনতা দিবস। ১৫ আগষ্ট জাতীয় ছুটি, দেশ জুড়ে বন্ধ সমস্ত স্কুল – কলেজ – অফিস। কিন্তু সমস্যা স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন নিয়ে। এবছর ১৬ ই আগস্ট পালিত হবে জন্মাষ্টমী। আর, সেই জন্মাষ্টমীতে ছুটি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

জন্মাষ্টমী হল হিন্দু ধর্মের অন্যতম একটি জনপ্রিয় উৎসব। পুরান মতে, এই দিনেই মামা কংসের কারাগারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ভগবান কৃষ্ণ। তারপর বসুদেব ও দেবীকির পুত্র স্থানান্তরিত হয় নন্দ রাজের বাড়ীতে। সেখানেই তার লীলাভূমি। এই জন্মাষ্টমীতে সারাদেশের মতো  উৎসবে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। কিন্তু প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের ছুটির তালিকায় জন্মাষ্টমীর দিন অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এবছর ব্যতিক্রম দেখা দিয়েছে। এবছর জন্মাষ্টমীর দিন অর্থাৎ আগামী ১৬ই আগষ্ট ছুটি নয়। সেই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তার প্রতিবাদে সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এক শ্রেণীর রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে, এবছর কৃষ্ণ সপ্তমী শেষ হচ্ছে ভারতীয় সময় অনুযায়ী ১৫ ই আগষ্ট মধ্যরাতে। তারপর শুরু হচ্ছে কৃষ্ণ অষ্টমী অর্থাৎ জন্মাষ্টমী। ১৬ই আগষ্ট শনিবার সারাদিন জুড়ে পালিত হবে জন্মাষ্টমী। সেই কারণেই সারাদেশে ১৬ই আগষ্ট ছুটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত ছুটির তালিকায় স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমী দুটি উৎসবকেই একই দিন অর্থাৎ ১৫ ই আগষ্ট হিসাবে দেখানো হয়েছে। সেখানেই বিতর্কের মূল। ১৫ই আগষ্ট স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ই আগষ্ট জন্মাষ্টমী দুই দিন পৃথক ছুটির বদলে একদিন মাত্র ছুটি অর্থাৎ শুক্রবার ছুটি কিন্তু শনিবার ছুটি নয় বা কাজের দিন। সাধারণত শনিবার বেশিরভাগ সরকারি প্রশাসনিক অফিস ছুটি থাকে। কিন্তু স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শনিবার খোলা থাকে। অর্থাৎ এবছর জন্মাষ্টমীর ছুটি থেকে বঞ্চিত হবেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্র- ছাত্রীরা। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু বিতর্ক। প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন।

সাধারণত, প্রতিবার বছরের শুরুতে ছুটির তালিকা তৈরি করে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই তালিকা প্রস্তুতিতে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় বাংলা ও ইংরেজি ক্যালেন্ডারের কিছু ছোটখাটো পার্থক্য। দুই ক্যালেন্ডার তুলনা করলে দু- একটা নির্দিষ্ট দিন আগে- পিছু হয়ে যায়। খুব সম্ভবত সেই সমস্যার কারণে জন্মাষ্টমী ছুটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসের ছুটি আবার রবিবার এমনিতেই ছুটি তার সাথে শনিবার ছুটি হলে সরকারি কর্মচারীরা সপ্তান্তে টানা তিন দিন ছুটি পাবেন। এই টানা ছুটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে নেওয়ার সুযোগ থাকে তাদের কাছে। পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, ছোটখাটো ভ্রমণ, জন্মাষ্টমীর পুজো, কেনাকাটা ও ছেলেমেয়ের পড়াশুনায় নজর। তাই শনিবার ছুটি হাতছাড়া হওয়ার কারণে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্যালেন্ডারের ত্রুটির কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। আশা করা যায়, বৃহস্পতি বারের মধ্যে সরকার এই বিষয়ে গুরুত্বপুর্ন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। ইতিমধ্যেই, বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড শনিবার ছুটি ঘোষণা করেছে। এখন দেখা যাক, আগামী শনিবার শিক্ষকদের ছুটি মঞ্জুর হয় কিনা।

Leave a Reply

Back to top button